
ছল (কবিতা) – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর Chol poem Rabindranath Tagore
তোমারে পাছে সহজে বুঝি তাই কি এত লীলার ছল – বাহিরে যবে হাসির ছটা ভিতরে থাকে আঁখির জল। বুঝি গো আমি, বুঝি গো তব ছলনা – যে কথা তুমি বলিতে চাও সে কথা তুমি বল…

তোমারে পাছে সহজে বুঝি তাই কি এত লীলার ছল – বাহিরে যবে হাসির ছটা ভিতরে থাকে আঁখির জল। বুঝি গো আমি, বুঝি গো তব ছলনা – যে কথা তুমি বলিতে চাও সে কথা তুমি বল…

তোমার কাছে আমিই দুষ্টু ভালো যে আর সবাই । মিত্তিরদের কালু নিলু ভারি ঠাণ্ডা ক – ভাই ! যতীশ ভালো , সতীশ ভালো , ন্যাড়া নবীন ভালো , তুমি বল ওরাই কেমন ঘর করে রয় আলো । মাখন বাবুর…

একদা রাতে নবীন যৌবনে স্বপ্ন হতে উঠিনু চমকিয়া, বাহিরে এসে দাঁড়ানু একবার— ধরার পানে দেখিনু নিরখিয়া । শীর্ণ হয়ে এসেছে শুকতারা, পূর্বতটে হতেছে নিশিভোর । আকাশকোণে বিকাশে জাগরণ, ধরণীতলে ভাঙে নি ঘুমঘোর । সমুখে প’ড়ে দীর্ঘ রাজপথ, দু ধারে…

যথার্থ আপন কুষ্মাণ্ডের মনে মনে বড়ো অভিমান, বাঁশের মাচাটি তার পুষ্পক বিমান। ভুলেও মাটির পানে তাকায় না তাই, চন্দ্রসূর্যতারকারে করে ‘ভাই ভাই’। নভশ্চর ব’লে তাঁর মনের বিশ্বাস, শূন্য-পানে চেয়ে তাই ছাড়ে সে নিশ্বাস। ভাবে, ‘শুধু মোটা এই বোঁটাখানা…

নাম তার কমলা, দেখেছি তার খাতার উপরে লেখা। সে চলেছিল ট্রামে, তার ভাইকে নিয়ে কলেজের রাস্তায় । আমি ছিলেম পিছনের বেঞ্চিতে। মুখের এক পাশের নিটোল রেখাটি দেখা যায়, আর ঘাড়ের উপর কোমল চুলগুলি খোঁপার নীচে। কোলে তার ছিল বই…

নিবেদিল রাজভৃত্য, “মহারাজ, বহু অনুনয়ে সাধুশ্রেষ্ঠ নরোত্তম তোমার সোনার দেবালয়ে না লয়ে আশ্রয় আজি পথপ্রান্তে তরুচ্ছায়াতলে করিছেন নামসংকীর্তন। ভক্তবৃন্দ দলে দলে ঘেরি তাঁরে দরদর-উদ্বেলিত আনন্দধারায় ধৌত ধন্য করিছেন ধরণীর ধূলি। শূন্যপ্রায় দেবাঙ্গন; ভৃঙ্গ যথা স্বর্ণময় মধুভান্ড ফেলি সহসা কমলগন্ধে…